এর আগে মুখে বলেছিলেন, বাংলা ভাগের চক্রান্ত রুখে দেবেন তিনি। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের জেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সমস্ত জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, সেখানেই তিনি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির প্রশাসনকে বলেন, রাজ্য ভাগের চক্রান্তের বিষয়ে সজাগ থাকতে। অপ্রীতিকর কিছু দেখলেই যেন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বিজেপির একের পর এক সাংসদের বক্তব্যে রাজ্য ভাগের দাবি এখন বঙ্গ রাজনীতির সব থেকে বড় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। তার বিরোধিতায় এতদিন রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দিচ্ছিল তৃণমূল। কিন্তু এদিন সরাসরি প্রশাসনিক পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনেকের মতে, মমতা বুঝিয়ে দিতে চাইলেন বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি মাথা তুলতে চাইলেই কড়া হাতে তার মোকাবিলা করবে প্রশাসন। কোনও রেয়াত করা হবে না। যদিও বিজেপি রাজ্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই এই দাবির সঙ্গে দলের সম্পর্ক অস্বীকার করেছে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা মঙ্গলবার দিল্লিতে ঘরোয়া বৈঠকে রাজ্যভাগের দাবিদারদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দল এমন দাবি সমর্থন করে না। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও একই কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, প্রথম রাজ্য ভাগের দাবি তুলেছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। উত্তরবঙ্গের মানুষকে বঞ্চনার বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে পৃথক রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা প্রয়োজন। বার্লার বক্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই আবার বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেছেন, জঙ্গলমহল তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলকে আলাদা রাজ্য করা প্রয়োজন। তাহলেই রাঢ় বাংলার মানুষ অনটন থেকে মুক্তি পাবেন।
যদিও বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, রাজ্য ভাগের দাবি বিজেপি কখনও করেনি। বিজেপি চায় অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গ। এসব দাবি যাঁরা করছেন তাঁরা তাঁদের ব্যক্তিগত মত বলছেন।
কিন্তু ব্যাপারটা সেখানে থামেনি। রাজ্য ভাগের দাবি যখন ক্রমশ সংক্রামিত হচ্ছে তখন গতকাল কড়া বার্তা দেন দিলীপ। তিনি বলেন, রাজ্য ভাগের দাবি দলের নয়। দলে থাকতে গেলে দলের অবস্থান মেনেই চলতে হবে। বলাইবাহুল্য এই ধরনের দাবি জাতীয় স্তরকেও আন্দোলিত করে। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে দেখে গতকালই সৌমিত্র খাঁকে দিল্লি ডেকে কার্যত ধমকের সুরেই সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলে দিয়েছেন, মুখ সামলে কথা বলতে। তাঁর কথার জন্য দলের বিড়ম্বনা বাড়ছে।
অনেকের মতে, বিজেপি নেতৃত্বও বোঝাতে চাইছে এসব দাবি ব্যক্তিগত ভাবেই নেতারা বলছেন। দল এসবের মধ্যে নেই। যদিও শৃঙ্খলাবদ্ধ দলে একের পর এক নেতা কী ভাবে এই স্পর্শকাতর বিষয়ে ধারাবাহিক মন্তব্য করছেন তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
তবে এদিন মমতা স্পষ্ট করে দিলেন, রাজ্য বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি যদি মাথা তুলতে চায় তাহলে তাঁর প্রশাসনও যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন